Friday, October 17, 2025

তাছাউফ এর ত্বরীকাহ ও ত্বরীকাহ আল-রাজ সম্পর্কে বিস্তারিত দলিল ভিত্তিক আলোচনা

তাছাউফ এর ত্বরীকাহ ও ত্বরীকাহ আল-রাজ সম্পর্কে বিস্তারিত দলিল ভিত্তিক আলোচনা

ত্বরীকাহ শব্দ শুনলে আজকাল দেখি অনেক মানুষ নাক সিটকায়, বিশেষ করে বাতিল ফেরকার ব্রেইন ওয়াশ করা যুবক-যুবতিরা। আসলে আফসোস লাগে এদের হাল দেখে, মহান আল্লাহ পাক এদের চোখ, কান, ব্রেইন, ক্বলব সবই দিয়েছেন, কিন্তু এগুলো তারা দিয়ে দিয়েছে তাদের শুয়ুখরুপী শয়তানের ক্বলবের অধিকারীদের নিকট। তাদের ঐ কথিত শুয়ুখরা যা বলে তাই তারা সঠিক মনে করে যদিও তা কুরআন ছুন্নাহর ১৮০* বিপরীত হয়। তারা যদি মানুষ হতো, মুছলিম হতো, তাহলে অবশ্যই তাফাক্কুর, তাদ্বাব্বুর করতো। কুরআন-ছুন্নাহ আহলে জিকর থেকে জানতো, এবং মানতোও। কিন্তু শুয়ুখরুপী শয়তানের ক্বলবের অধিকারীদের নিকট থেকে হাক্বিকি দ্বীন জানা ও শিখা তো আর বাস্তবে সম্ভব না। তাই ত্বরীকত ব্যতীত শরীয়ত দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাওয়ার চেষ্টা করা জাহেলিয়াত আশ্চর্য লাগে যখন বিশাল বিশাল ডিগ্রিধারী জাহিল মুল্লারাও মানুষকে ত্বরীকত তথা ইলমে তাসাউফের পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে, মনগড়া ব্যখা দিয়ে, ব্রেইন ওয়াশ করে কেবল শরিয়তপন্থী বানিয়ে দেয়আর তাদের মূর্খ মুকাল্লিদরাও তা চোখ বন্ধ করে গিলতে থাকে অথচ ত্বরীকত ব্যতীত শরীয়ত দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট যাওয়ার, পৌঁছানর কোন সুযোগই নাইত্বরীকত শব্দ শুনলেই কথিত লা-মাজহাবি, অধিকাংশ দেওবন্দি, ছলাফি লাফ দিয়ে উঠে, ভাবখানা এমন যেনো এইটা অমুছলিমদের কোন কিতাব থেকে এসেছে, অথচ ত্বরীকাহ শব্দ খোদ কুরআন শরীফ থেকেই এসেছেনআর ত্বরীকাহ এসেছেন ত্বরীক থেকেআর ত্বরীক-এর মানে হলো রাস্তা, পথ, ডাইরেকশন

সম্মানিত কুরআন ছুন্নায় বিশ্বাসী মুও’মিনগণ আসুন দেখি আমরা ত্বরীকাহ কি? ত্বরীকাহ নিয়ে নাক সিটকানোর কিছু কি আছে? নাকি নাক সিটকিয়ে বেঈমান মরদুদ শয়তান হতে হচ্ছে।

ত্বরীকাহ শব্দের অর্থ আরবি শব্দ طَرِيقَةٌ” (ত্বরীকাহ) এসেছে طَرَقَধাতু থেকে, যার অর্থ পথ”, “পথে হাঁটা”, “চলা”, “পদ্ধতি”, বা ধারা” অথবা “কোনো কিছুকে ধাক্কা দিয়ে খোলা”শব্দটি অর্থগত দিক দিয়ে বোঝায়ঃ- “নির্দিষ্ট পদ্ধতি, অভ্যাস, বা জীবনধারা”কুরআন শরীফে এই শব্দটি একাধিকবার এসেছে, যেমনঃ ছুরা ত্ব-হা এর ২০/৬৩ নং আয়াত শরীফে, ২০/১০৪ নং আয়াত শরীফে, ছুরা জ্বীনের ৭২/১৬ নং আয়াতে। প্রত্যেক জায়গায় “ত্বরীকাহ” শব্দটি এমন এক পথ বা পদ্ধতির ব্যপারে ব্যবহৃত করা হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ‘আদর্শিক বা শ্রেষ্ঠ’ পথ হিসেবেই বিবেচিত ছিলোযদিও উক্ত আয়াতসমূহে তা এসেছে কাফিরদের বক্তব্য ও প্রসঙ্গের ভেতরে, তথাপি আল্লাহ তা’য়ালা সেই শব্দ ব্যবহারে কোনো নাকচ করেননি, বরং তাদের নিজেদের ভাষায় তুলে ধরেছেন এ থেকে বোঝা যায় “ত্বরীকাহ” শব্দটি কুরআন দ্বারা স্বীকৃত, এবং তা জীবনধারা, চিন্তাধারা, বা ধারাবাহিক রূহানী পন্থা বোঝাতে ব্যবহারযোগ্য

মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে বলেনঃ (وَّ اَنَّا مِنَّا الۡمُسۡلِمُوۡنَ وَ مِنَّا الۡقٰسِطُوۡنَ ؕ فَمَنۡ اَسۡلَمَ فَاُولٰٓئِكَ تَحَرَّوۡا رَشَدًا وَ اَمَّا الۡقٰسِطُوۡنَ فَكَانُوۡا لِجَهَنَّمَ حَطَبًا وَّ اَنۡ لَّوِ اسۡتَقَامُوۡا عَلَی الطَّرِیۡقَۃِ لَاَسۡقَیۡنٰهُمۡ مَّآءً غَدَقًا لِّنَفۡتِنَهُمۡ فِیۡهِ ؕ وَ مَنۡ یُّعۡرِضۡ عَنۡ ذِكۡرِ رَبِّهٖ یَسۡلُكۡهُ عَذَابًا صَعَدًا) (জ্বীনেরা বললো) আর আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মুসলিম, আবার কেউ কেউ অবিচারকারী; অতএব যারা আত্মসমর্পণ করেছে, তারাই হেদায়েতের তালাশ করেছেকিন্তু যারা অবিচারকারী, তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন (হয়েছে) (পেয়ারে হাবীব ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম আপনি বলুন) আর (আমার কাছে ওয়াহী করা হয়েছে এই মর্মে) যে যদি তারা ত্বরীকাহ-এর উপর অবিচল থাকতো, তাহলে আমি তাদেরকে অফুরন্ত বরকতময় পানি দ্বারা সমৃদ্ধ করতাম, যাতে আমি তাদেরকে এটা দিয়ে পরীক্ষা নিতে পারিআর যদি কেউ তার রবের জিকির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তিনি তাকে কঠোর আযাবে প্রবেশ করাবেন (ছুরাহ আল জ্বীন ৭২/১৪-১৭)

অতএব আমরা উক্ত ৪ আয়াত থেকে যা পেলাম তা হলো (رَشَدًا) রশাদ হচ্ছে মুওমিনদের এমন এক অবস্থা যেখানে তারা তাদের জীবন সঠিক/হেদায়েতের পথে পরিচালনা করেন। অর্থাৎ মুর্শিদের দেখানো পথে, কেননা মুর্শিদ শব্দের মূল ধাতুই হচ্ছেন রশাদ, আর যিনি রশাদ বা সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দেন তিনিই মুর্শিদ। এরপর পেলাম (الطَّرِیۡقَۃِ) ত্বরীকাহ যার অর্থ “পথ”, “পথে হাঁটা”, “চলা”, “চলার পদ্ধতি”। এরপর পেলাম (ذِكۡرِ رَبِّهٖ) রবের জিকির।

অতএব, আমরা এই আয়াতগুলো থেকে বুঝি, রশাদ (হেদায়েত) হচ্ছেন মুমিনদের এমন এক অবস্থা যেখানে তারা সঠিক পথে চলেন, অর্থাৎ আল্লাহ ওয়ালা মুর্শিদের দেখানো পথেআর ত্বরীকাহ হচ্ছেন নির্ভেজাল, সঠিক হক্ক পথ, জীবনযাপন পদ্ধতি যা মুর্শিদের ছ্বহবত থেকে রবের যিকির দ্বারা অর্জিত হয়

আর আহলুছ ছুন্নাহ এর আক্বিদাহ-বিশ্বাসে ১০০% বিশ্বাসী “প্রত্যেক ত্বরীকাহ-ই হক্ব পথ, তবে যা শরিয়তের ভিত্তিতে পরিচালিত নয়, তা হলো বিভ্রান্তিঅর্থাৎ, ত্বরীকাহ কখনোই শরীয়তের বাইরের কোন বিষয় নয়, বরং এটি শরীয়তের ভিতরেই আত্মশুদ্ধির গভীর পথশরীয়তকে শরীর বললে, ত্বরীকাহ তার রূহ যেকোন ত্বরীকাহ যা আহলুছ ছুন্নাহ-এর আক্বীদাহ বিশ্বাসের বিপরীতে বিশ্বাস রাখে, আমল করে তা বাতিল।

ত্বরীকার প্রয়োজন কেন?

মূলত তালিমে ত্বরীকাহ হচ্ছেন ঐ তালীম বা শিক্ষা, যা অর্জন করে সম্মুখে থাকা হাজারো ভ্রান্ত রাস্থার মধ্যে সঠিক রাস্তা চিনে সেই পথ ধরে মাক্বসুদে মঞ্জিলে অনায়াসে পৌঁছে যাওয়াঅতএব শরীয়ত মূলত কানুন বা লোআর ত্বরীকত হলেন রাস্থা যেখানে আইন এপ্লাই করা হয়

একজন মুসলিম যে মহান আল্লাহ পাক উনাকে হাছিল করতে চায়, তাকে শরীয়তের মাধ্যমে নফছের তাঁহারাত হাসিল করতে হয়আর যখন শরীয়তের পাবন্দ হয়ে নফছের তাঁহারাত হাসিল করে ফেলে, তখন ক্বলবি জিকির দ্বারা সে ত্বরীকতে প্রবেশ করে

শরীয়তে তাছলিম হওয়ার মাধ্যমে নফছ পাক হয়ে যায়আর যখনই নফছ পাক হয়ে যায়, তখনই সে মুর্শিদের অনুমতি সাপেক্ষে ক্বলবের জিকির শুরু করে দেবে, ফলশ্রুতিতে সে ত্বরীকতে দাখিল হয়ে যাবে, অর্থাৎ তখন তার যাত্রা শুরু হয়ে যাবে আর ত্বরীকত মূলত ক্বলব বেদার বা জাগ্রত হওয়ার মাধ্যমেই শুরু হয়ে থাকেআর সেটার ফাইনাল ডেসটিনেশন হয় বাকাবিল্লাহতেমানুষ রূহের জগত থেকে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত যে যাত্রা করছে, এর পুরোটাই মূলত ত্বরীকতের উপর হয়ে থাকেএমনকি যা মানুষকে জাতে ইলাহিতে পৌঁছে দেয় তাই ত্বরীকত

শরীয়ত হচ্ছেন আইন অর্থাৎ একটি গাড়ি নিদৃষ্ট রাস্তায় চলার কানুন আর ত্বরীক হচ্ছেন সেই রাস্তা যার উপর ছ্বফর করে মুছাফির তার মঞ্জিলে পৌঁছায়। একজন ব্যক্তি যত ভালো ড্রাইভার হোক, আর যতই সে আইন-কানুন জানুক বা মানুক, যদি সে সঠিক রাস্থা না চিনে তাহলে তার পক্ষে গন্তব্যে পৌঁছানো অসম্ভব, অর্থাৎ শরীয়ত জেনেও সে গুমরাহ হয়ে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াবে। একারণেই ফরজ ইবাদতের আগে মহান আল্লাহ তায়ালা তাজকিয়ার তাকীদ করেছেন, যা ত্বরীকার অনুসারী হওয়া ছাড়া কারো পক্ষেই অর্জন করা সম্ভব নয়। যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ (قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّىٰ) “কামিয়াব হলো সেই ব্যক্তি, যে তার নফছের তাজকিয়া করলো, আর তার রব তায়ালা উনার জিকির করল এরপর গিয়ে নামাজ আদায় করল” (ছুরা আল-য়া‘লা, ৮৭:১৪-১৫)

অতএব প্রথমে নফছের তাজকিয়া করে তারপর ইছমে জাত আল্লাহ/লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ দ্বারা হুজুরি ক্বলব বানিয়ে তারপর নামাজ পড়লে সেটা হাক্বিকি ইবাদত বলে গন্য হবে।

এখন কথা হচ্ছে, নতুন ত্বরীকাহ সৃষ্টির বৈধতা কি আছে?

এটা বুঝতে হলে মূল নীতি বুঝতে হবেঃ নতুন দীন সৃষ্টি করা যাবে না, তবে নতুন ত্বরীকাহ (আত্মশুদ্ধির বৈধ, শরিয়তসম্মত পদ্ধতি) তৈরি করা যাবে যদি তা কুরআন-ছুন্নাহ ও আহলে ছুন্না ওয়াল জামাআতের মূলনীতি বিরোধী না হয়

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ (كُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ تَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡكَرِ وَ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ) তোমরাই সর্বোত্তম উম্মাত, মানবজাতির (সর্বাত্মক কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভুত করা হয়েছে, তোমরা সৎকাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজ হতে নিষেধ কর এবং মহান আল্লাহ তায়ালা উনার প্রতি ঈমান রক্ষা করে চল (ছুরা আলে ইমরান ৩/১১০)

প্রতিটি যুগে উত্তম কাজের আদেশপৌঁছানোর পদ্ধতি আলাদা হতে পারে ভিন্ন ভিন্ন ত্বরীকা

এছাড়াও মহান আল্লাহ তায়ালা উনার মৌন সম্মতিও পাওয়া যায় উনার নৈকট্য লাভের জন্যে যেকোন পথ, পদ্ধতি, ত্বরীকাহ উদ্ভাবনে, যেমন তিনি বলেনঃ (وَ جَعَلۡنَا فِیۡ قُلُوۡبِ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡهُ رَاۡفَۃً وَّ رَحۡمَۃً ؕ وَ رَهۡبَانِیَّۃَۨ ابۡتَدَعُوۡهَا مَا كَتَبۡنٰهَا عَلَیۡهِمۡ اِلَّا ابۡتِغَآءَ رِضۡوَانِ اللّٰهِ فَمَا رَعَوۡهَا حَقَّ رِعَایَتِهَا ۚ) ঈসা য়ালাইহিছ ছালামের অনুসারীদের অন্তরে দিয়েছিলাম করুণা ও দয়া; কিন্তু দরবেশী জীবনতো তারা নিজেরাই মহান আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য উদ্ভাবন করেছিল; আমি তাদের উপর ফরজ করিনি; অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি (ছুরা হাদিদ ৫৭/২৭)

পূর্ববর্তী উম্মত, ঈসা য়ালাইহিছ ছালামের ছ্বহাবিরা নিজেরা নতুন ইবাদতের পন্থা তৈরি করেছিলেন মহান আল্লাহ তা’য়ালার নৈকট্য হাছিলের উদ্যেশ্যে (যদিও তা মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের ওপর ফরয করেননি), তবে আফসোস করেছেন এই বলে যে, সেইসব সূফীদের মধ্যে কতিপয় সেই ত্বরীকার উপর ইস্তিকামত থাকেনি, তবে যারা থেকেছে তাঁদেরকে তিনি তাদের নিয়ত অনুযায়ী পুরষ্কার দিয়েছেন

ইমাম রাযী রহমতুল্লাহ বলেনত্বরীকার মধ্যে নতুন কোন নিয়ম যদি তৈরি করা হয়, যদি তা শরীয়তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে তা বিদআত নয়, বরং ইজতিহাদ (তাফসীরে ফখরুদ্দীন রাযী)

উদাহরণ পূর্ববর্তী ত্বরীকাহগুলো কীভাবে গঠিত হয়েছিল?

  • চিশতিয়াখাজা আবু ইসহাক চিশতী রহমতুল্লাহ (৩২১ হিজরি)
  • কাদেরিয়াশায়খ আবদুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহ (৪৭০ হিজরি)
  • নকশবন্দিয়াইমাম বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহ (৭১৮ হিজরি)

এই সব ত্বরীকাহ নবীজী ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম-এর ছুন্নাহর মূলনীতির ভিতরে থেকে তৈরি করা হয়েছে এবং তাদের সবাই শরিয়ত মান্য করে তাজকিয়া, যিকির, নূর ও ফানা-বাক্বা অর্জনের পথ তৈরি করেছেন

উপসংহারঃ মূলত ত্বরীকাহ হলো কেবল ইবাদতের বাহ্যিক কাঠামোর পেছনে থাকা রূহানী প্রাণশরীয়ত হলো ছিদ্রহীন শরীর, আর ত্বরীকাহ হলো তার মধ্যে প্রবাহিত আত্মা

নতুন ত্বরীকাহ গঠন বৈধ, যদি তা

  • শরীয়তের বাইরে না যায়
  • আহলে ছুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আক্বীদা অনুসরণ করে
  • ছুন্নত কে পরিত্যাগ করে বিদআতি কোন আমল চালু না করে।
  • আধ্যাত্মিক উন্নয়ন ও নূর অর্জনের প্রকৃত মাধ্যম হয়

আমাদের “ত্বরীকাহ আল-রাজ” কি?

ত্বরীকাহ আল-রাজ হলো এক অনন্য রূহানী পথ বা পন্থা, যার লক্ষ্য শুধুমাত্র বাহ্যিক ইবাদাতে সীমাবদ্ধ নয় বরং আত্মার গভীরে প্রবেশ করে নূরের উৎসে সংযুক্ত হওয়াএই ত্বরীকাহর প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ রাজিব খাজা, ১৪৪৪ হিজরীর, রজব মাসের তারিখ, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ ঈসায়ী তথা রগ্বায়ীব শরীফে এই ত্বরীকার যাত্রা শুরু করেনএটি পূর্ববর্তী কোনো শাজরা/ছিলছিলার অনুসারী কোন ত্বরীকাহ নয়; বরং স্বতন্ত্র আধ্যাত্মিক পথ/পদ্ধতি যা সরাসরি মহান আল্লাহ তায়ালার নূরের দিকে আহ্বান করে থাকেন, শাকির ও জাকির হতে

এই ত্বরীকাহর নাম আল-রাজ এসেছে ত্বরীকার ইমাম মুহাম্মদ রাজিব খাজা উনার নাম থেকে, যেখানে রাজশব্দটি উর্দু-ফারসি ঘরানায় গোপন রহস্য ও রাজত্বের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে সম্মানিত পবিত্র এই ত্বরীকাহ আল-রাজ মূল চারটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গঠিত

·        প্রথমত, আত্মশুদ্ধিনফসকে পরিশুদ্ধ করে তাকে নফসে মুতমাইন্না বা নফসে রহমানিয়ায় উন্নীত করা

·        দ্বিতীয়ত, নূর অর্জনক্বলব ও রূহকে নূরানী, রৌশন, মুনাওয়্যার করে, নার তথা জাহান্নামের অন্ধকার আগুন থেকে নফছকে রক্ষা করা

·        তৃতীয়ত, মারিফাতুল্লাহমহান আল্লাহ তায়ালার সত্তা, সিফাত ও রযামন্দি অর্জনের অন্তর্দৃষ্টি লাভ করা

·        চতুর্থত, শাকের বান্দা হওয়া ইবলিসের যে চ্যালেঞ্জ ছিলো “আপনি তাদের অধিকাংশকে শাকের হিসেবে পাবে না”, তার জবাবে এ ত্বরীকাহ একজন মুরীদকে শাকের বান্দায় রূপান্তরিত করাকেই সর্বোচ্চ সফলতা হিসেবে বিবেচনা করে

ত্বরীকাহ আল-রাজের রূহানী ম্যাকানিজম সম্পূর্ণ ক্বলব-নির্ভরএই পথে ইছমে জাত আল্লাহবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহদ্বারা দায়ীমী ক্বলবী যিকিরই হচ্ছে আত্মশুদ্ধি ও নূর লাভের মূল মাধ্যমএই দায়ীমী জিকিরের ফলে কেবল মুখস্থ নয়, বরং মুমিনের ক্বলব সর্বক্ষণ মহান আল্লাহ তায়ালা উনার স্মরণে জেগে থাকে, যার মাধ্যমে ক্বলবে নূর সঞ্চার হয়, নফস পরিশুদ্ধ হয় এবং কারিন ও ইবলিস শয়তান দুর্বল হয়ে পড়ে

এই ত্বরীকাহ অন্যান্য সুফি তরীকাহ থেকে ভিন্নতা ধারণ করেযেমনজান্নাত নয়, বরং মুকাররবীনদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া এখানে মূল লক্ষ্য কেবল বাহ্যিক রুকু-সিজদা নয়, বরং অন্তরের সংযুক্তি ও জিকরে ইলাহীতে সদা সর্বদা মশগুল থাকা এখানে মূল বিষয়দুনিয়া/নাছুৎ এই ত্বরীকার দৃষ্টিতে ঐচ্ছিক, আর আখিরাত অপরিহার্য

ত্বরীকাহ আল-রাজ সাতটি লতিফার উপর ভিত্তি করে আত্মার উন্নতি সাধন করে, যথাঃ


১.
লতিফা-এ-আনা (তৃতীয় নয়ন – রূহানী দর্শনের দরজা)

২. লতিফা-এ-ক্বলব

৩. লতিফা-এ-নফস

৪. লতিফা-এ-রূহ

৫. লতিফা-এ-সির

৬. লতিফা-এ-খফি

৭. লতিফা-এ-আখফা

এই লতিফাসমূহ ধাপে ধাপে রূহানী খোলাসা ও আত্মিক তাজাল্লিয়াতের দরজা খুলে দেয়ক্বলব লতিফা থেকেই মূলত নূর প্রবাহ শুরু হয়, যা নফসকে আলোকিত করে নফসে আম্মারা থেকে উত্তীর্ণ করে নফসে লাওয়ামা, নফসে মুলহিমা হয়ে নফসে মুতমাইন্না নফসে রহমানিয়ায় পৌঁছে দেয়

এই ত্বরীকার দৈনন্দিন আমলসমূহ অত্যন্ত সুবিন্যস্ত ও বাধ্যতামূলকএর মধ্যে রয়েছে: ফজর ও মাগরিবের পরে ত্বরীকার ছ্ববক আদায়। মহান আল্লাহ তায়ালা, রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ও মুর্শিদের মোরাকাবা, শরছ্বদরের য়া’মল, প্রতিটি নামাযের পরে ছুন্নাহ সম্মত তাছবিহ, যিকির ও দোয়া, প্রতিদিন কুরআন শরীফের (তরজমাসহ) নিদৃষ্ট কিছু আয়াত পাঠ করা, আসমাউল হুসনা পাঠ করা, ক্বারিন শয়তান থেকে বেঁচে থাকার দোয়া এবং মিনিমাম এক মিনিট হলেও দৈনিক ক্বলবী যিকির করাএছাড়াও কিছু গোপন আমল রয়েছে, যা শুধুমাত্র যোগ্য মুরীদদের শিক্ষা দেওয়া হয়

ত্বরীকাহ আল-রাজ এ বিশ্বাস করে, নূরই হেদায়াতের উৎসইবলিক্বারিন নার দ্বারা পুষ্ট হয়, আর নূর তাদের ক্ষয় করেতাই ক্বলবী যিকির, ইস্তিগফার ও তাজকিয়ার মাধ্যমে ক্বলব ও নফছ যখন নূরপূর্ণ হয়, তখন সে ইবলিক্বারিন ১০০% হেফাজতে থাকে এই ত্বরীকাহ একজন মুরীদকে শুধু নামাজি বা রোযাদার বানায় না; বরং এমন একজন বান্দায় পরিণত করে, যার ক্বলব সর্বদা মহান আল্লাহ তায়ালার যিকিরে প্রাণবন্ত থাকে এবং সত্যিকারের শাকেরবান্দায় পরিণত হয়এভাবেই ত্বরীকাহ আল-রাজ ইবলিসের একমাত্র চ্যালেঞ্জঃ “আপনি তাদের অধিকাংশকে শাকের হিসেবে পাবে নাতার ঐ চ্যালেঞ্জের জবাব দেয় আর এটাই ত্বরীকাহ আল-রাজ এক নূরের সফর, আলমে নাছুৎ থেকে আলমে আহদিয়াত পর্যন্ত

Monday, July 14, 2025

শাতিম ছ্বলাফি ইমাম নূর রহমান বনাম মুক্তাদি ছুন্নী উম্মত আশিকে রছুল বিল্লাল হোসেন

শাতিম ছ্বলাফি ইমাম নূর রহমান বনাম মুক্তাদি ছুন্নী উম্মত আশিকে রছুল বিল্লাল হোসেন

এক উগ্রপন্থী ছ্বলাফি টেলিগ্রামে পোষ্ট করেছে, “গতকাল জুমার নামাজের সময় চাঁদপুরে ইমামকে কুপিয়ে জখম, উগ্র মাজারপূজারী আটক।

চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়ার মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজের খুতবার সময় খতিব মাওলানা আ.ন.ম. নূর রহমান মাদানীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে এক উগ্র মাজারপূজারী ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার, নামাজের খুতবার সময়হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করে স্থানীয় মুসল্লিরা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেনবর্তমানে আহত খতিবকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে খতিব মাওলানা নূর রহমান মাদানী চাঁদপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ গুনরাজদির বাসিন্দা ও উক্ত মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম অন্যদিকে, আটক হওয়া হামলাকারী মো. বিল্লাল হোসেন শহরের বকুলতলা এলাকার বাসিন্দা এবং উগ্র মাজারপূজার মতাদর্শে বিশ্বাসী বলে জানা গেছে ঘটনাটি এলাকাজুড়ে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে

এম ডি লোকমান, নামের আরেক উগ্রপন্থী ছ্বলাফি ছেলে টেলিগ্রামের একটি চ্যানেলে কমেন্ট করেছেঃ যে কুপাইছে এটা এক শিন্নিখুর মাজার পুজারি সন্ত্রাসী, ইমাম সাহেব মদিনা ভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েট করা, একজন খতিবকে এই মাজার পূজারি সিন্নিখুর হত্যার উদ্দেশ্য হামলা করেছে

অথচ এই ব্রেইন ওয়াশ যুবকদের কেউই জানেনা যে, ছুন্নীদের মাজারপূজারী বলে যারা তাকফির করে আক্রমণ করে তারা কি মুছলিম থাকে? এছাড়াও তাকফির কতো ভয়ানক জিনিস। পড়ুনঃ তাকফির কি? তাকফিরের মূলনীতি ও ব্যখ্যা বিশ্লেষণ

আসলে দোষটা উঠতি বয়সের মুছলিম দাবিদার জাহিল পোলাপান এর নয়, দোষ হলো ভাড়াটিয়া মুল্লা, সোশ্যাল মুল্লা, টেলিভিশন মোল্লাদের এরা হুব্বে রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তো দূরের বিষয়, আদব টাও শিখায়নি

ওহাবি, ছ্বলাফি দেওবন্দী ঘরানার অধিকাংশই গোস্তাখ, বে আদব জাহিল, দেওবন্দী কম, তবে ওহাবী ছ্বলাফিরা বেশিএরা কেবল আবিদ বানানোর ব্যবসায়ী হয়েছে, অথচ তারাও জানে সবচেয়ে বড় আবিদ ছিলো আযাযিল, যে বুগজে আদম য়ালাইহিছ ছালামে লানতুল্লাহ হয়ে গেছে তার বে আদবির ফলেতার ইবাদত তাকে রক্ষাই করতে পারেনি অথচ ফুজায়েল বিন আয়াজ রহমতুল্লাহ নামক একসময়ের খুনি, ডাকাত সর্দার সাইয়্যিদুল আশিক হয়ে গেছেন উনার হুব্বে রছুলে

দেওবন্দি মুফতি মারুফ কাসেমি, প্রধান মুফতিঃ মারকাযুল কুরআন আস ছুন্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসা মিরপুর দাওরায়ে হাদীস ও তাখসিস ফিত তাফসীর, আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলম মইনুল ইসলাম হাটহাজারি মাদ্রাসা তিনি উনার ফেইসবুক পোষ্টে লিখেছেনঃ “উনি একজন লা-মাযহাবী শায়খ নামের ফেতনাবাজ, হামলা যে করেছে, সে অপরাধ করেছে, তবে, একটা বিষয় জেনে অবাক হলাম, হানাফি মসজিদ কে লা-মাযহাবী মসজিদে রুপান্তরিত করেছে, এই লা-মাযহাবী শায়খ, বিস্তারিত ভিডিও আকারে প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ”

কথা হলো দেওবন্দীরা কি ছুন্নী? মাজারপন্থী? মিলাদ পন্থী? না, মুফতির বক্তব্য কি? যে শাতিম ইমামকে মারা হয়েছে সে ফেত্নাবাজআর আল্লাহ পাক আল কুরআন বলেছেনঃ (وَٱلْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ ٱلْقَتْلِ) আর ‘ফিতনা’ তো হত্যার চেয়েও জঘন্য(২/১৯১) (وَٱلْفِتْنَةُ أَكْبَرُ مِنَ ٱلْقَتْلِ) ফিতনা তো হত্যার চাইতেও বড় (২/২১৭)

এবার আসি শাতিমের সহযোগীদের থেকে একজন ছুপা শাতিমের বিষয়ে, যে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার ফেইসবুকে একটা পোষ্ট দেয়

ডঃ মেহেদি হাসান নামের এক লোক যে (ICU In-Charge at Popular Medical College & Hospital) সে তার তার ফেইসবুকে একটা পোষ্টে বলেছে, “এই লোক কাল এক ইমামকে কুপিয়েছে নবীজির নামে কটুক্তি করার অভিযোগেইমাম সাহেবের দোষ, তিনি মিলাদকে বিদয়াত বলেনবলেছেন, নবীজির কাছে চাওয়া যাবে না, সরাসরি আল্লাহর কাছে চাইতে হবেনবীরা হলেন আল্লাহর বার্তাবাহক বা পিওনশব্দচয়নে সতর্ক হওয়া দরকার ছিলো - কিন্তু এখানে হেয় করা উদ্দেশ্য ছিলো নাএটুকু বলার কারণে এই হামলা করলো এই লোকটা তথাকথিত সুন্নি - যখন শাতিমরা নবীজির নামে জঘন্য কটুক্তি করে তখন এদের কোন খোঁজ থাকে নাথাবা বাবা, রাখাল রাহা, গালিবরা যখন কটুক্তি করে তখন এরা মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেএদের তলোয়ার কেবল ওহাবিদের গর্দান পাইলেই গর্জে ওঠে এই হলো ডঃ মেহেদি হাসান এর বক্তব্য

এখন একিই কথা যদি কোন কাফের বলতো তাহলে দেখা যেত সারা দেশ উথলে উঠছে শাতিমের ফতোয়া দিয়ে অথচ একজন কাফের এর পক্ষে রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম উনার শান মান জানার প্রশ্নই আসেনা, যার ইলম নাই তাকে করা হয় তাকফির, আর যার আছে তার ব্যাপারে হিকমাহ মুছলমান জানেওনা কখন কোথায় কার পক্ষে কার বিপক্ষে দাড়াতে হয় ঐ ইমামের পক্ষে না দাড়ালেও কারো ঈমান যাবেনা, কিন্তু আল্লাজীর নিকট যদি এই কাম গোস্তাখি হয়, তাহলে যারা দাড়ালো তাদের তখন কি হবে? ব্যাপার তো নাস্তিকদের মতই হয়ে গেলো, অথচ মুমিন থাকবে রিক্স ফ্রি

ডঃ মেহেদি হাসান বলেছে, ইমাম সাহেবের দোষ, তিনি মিলাদকে বিদয়াত বলেন, নবিকে পিয়ন বলেনএকারণে কি শাতিম হয়ে যাবেন? চিন্তা করা যায়, ডঃ মেহেদি হাসান নামের কবিরাজ যখন ডাক্তারি ছেড়ে আহলে জিকির সাজে তখন দ্বীনের কয়টা বাজে?

এই ডাক্তার ও তার সেই শাতিম ইমাম জানেও না যেঃ পবিত্র ‘ঈদে মীলাদুন নবী’ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম আসলে কি? এছাড়াও এরা বিদআত কাকে বলে? দ্বীনের মধ্যে নতুন সব কিছুই কি বিদআত? এইসব কিছুই আসলে জানেনা।

তাদের জানা না জানায় আমাদের কিছুই আসে যায়না, তবে যে ইমাম রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামকে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার বিপরীতে পিয়ন বলে সে নিস্বন্দেহে শাতিমমহান আল্লাহ পাক যখন রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে ডাকতেন, তখন (يَا سَاعِي) হে পিয়ন বলে সম্বোধন করতেন?

আচ্ছা পিয়ন বাদ দিলাম, আল-কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা কি সরাসরি মুহাম্মাদনাম ধরে রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম-কে কখনো ডেকেছেন?

উত্তরঃ হচ্ছে না, যদিও কুরআন শরীফে চারটি স্থানে মহান আল্লাহ তায়ালা “مُحَمَّدٌ” (মুহাম্মাদ) নাম উল্লেখ করেছেন, তবে কোথাও সরাসরি সম্বোধনের (নিদা/ডাক দেওয়ার) অর্থে ইয়া মুহাম্মাদ বলেননিবরং লক্বব বা মর্যাদাপূর্ণ পদবী দিয়ে সম্বোধন করেছেন

সেই চারটি আয়াত যেখানে মুহাম্মাদনাম মহান আল্লাহ তায়ালা ব্যবহার করেছেন সেগুলো হলোঃ

১. (وَ مَا مُحَمَّدٌ اِلَّا رَسُوۡلٌ ۚ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِهِ الرُّسُلُ) মুহাম্মাদ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তো কেবল একজন রছুলই ছিলেন; উনার পূর্বেও বহু রছুল গত হয়ে গেছেন (ছুরা আলে ইমরান ৩:১৪৪)

২. (وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ اٰمَنُوۡا بِمَا نُزِّلَ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَّ هُوَ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّهِمۡ ۙ كَفَّرَ عَنۡهُمۡ سَیِّاٰتِهِمۡ وَ اَصۡلَحَ بَالَهُمۡ) মহান আল্লাহ তা’য়ালা তাদের সব গুনাহ খাতা মাফ করে দেবেন এবং তাদেরকে সংশোধন করে দেবেন যারা মুমিন ও ছ্বলেহ বান্দা হয়েছে, আর মুহাম্মাদ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম উনার উপর যা কিছু নাজিল করা হয়েছে তাহার উপরও ঈমান এনেছে কেননা এটা একান্তভাবেই তাদের মালিকের পক্ষ থেকে আসা সত্য (ছুরা কিতাল ৪৭:২)

৩. (مُحَمَّدٌ رَّسُوۡلُ اللّٰهِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ مَعَهٗۤ اَشِدَّآءُ عَلَی الۡكُفَّارِ) মুহাম্মাদ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম মহান আল্লাহ তায়ালা উনার রছুল; আর যাঁরা উনার সঙ্গে রয়েছেন, উনারা কাফেরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর সুরা আল-ফাতহ (৪৮:২৯)

৪. (مَا كَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنۡ رِّجَالِكُمۡ وَ لٰكِنۡ رَّسُوۡلَ اللّٰهِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمًا) মুহাম্মাদ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তোমাদের পুরুষদের কারোরই পিতা ছিলেন না; বরং তিনি ছিলেন মহান আল্লাহ তায়ালা উনার রছুল এবং খতামুন নাবিয়্যিনআর মহান আল্লাহ তা’য়ালা সকল বিষয়ে অবগত(ছুরা আল-আহযাব ৩৩:৪০)

শুধুমাত্র এইসব আয়াত দিয়ে ধরলেও ঐ মুল্লার কাজ শেষ হয়ে যায়, মুল্লা নবিজী ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে পিয়ন বলে, চিন্তা করা যায়? ধরেন আবুল খায়ের গ্রুপ বাংলাদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ কোম্পানি ধরা যায়, যার মালিক বর্তমানে আবুল কাসেম আর এমডি আবুল হাশেমমুহাম্মাদ তৌহিদ হোসেন গ্রুপের একজন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেনএখন তিনি যদি ওয়ার্কারদের বলেন তোমাদের দাবী দাওয়া যা আছে মালিক আবুল কাসেমের নিকট বলবে, এমডি আবুল হাশেম তো একজন পিয়নএখন মালিক আবুল কাসেম আর এমডি আবুল হাশেম এটা শুনলে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে কি প্রমোশন দিবেন? উনাকে কি একারণেই উপদেষ্টা বানানো হয়েছে? যে এমডিকে পিয়ন বলে পরিচয় দিবেন?

যাইহোক, মহান আল্লাহ পাক মুহাম্মাদ নাম ধরে কোথাও "يَا مُحَمَّدُ" বলে ডাকেননিবরং, যখন ডাকার প্রয়োজন হলো তিনি ডাকলেনঃ

১. یٰۤاَیُّهَا الرَّسُوۡلُ– হে রছুল!

মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ (یٰۤاَیُّهَا الرَّسُوۡلُ بَلِّغۡ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡكَ مِنۡ رَّبِّكَ) হে রছুল ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পুরোপুরি পৌঁছে দিন (ছুরা আল-মায়েদাহ – ৫:৬৭)

২. یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ–হে নবী!

মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ (یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اتَّقِ اللّٰهَ وَ لَا تُطِعِ الۡكٰفِرِیۡنَ وَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلِیۡمًا حَكِیۡمًا) হে নবী ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম! আপনি মহান আল্লাহ তা’য়ালা উনাকে ভয় করুন এবং কাফের ও মুনাফিকদের অনুসরণ করবেন নানিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তা’আলা সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাবান (ছুরা আল-আহযাব – ৩৩:১)

৩. یٰۤاَیُّهَا الۡمُزَّمِّلُ - হে চাদরাবৃত মাহবুব

মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ (یٰۤاَیُّهَا الۡمُزَّمِّلُ قُمِ الَّیۡلَ اِلَّا قَلِیۡلًا نِّصۡفَهٗۤ اَوِ انۡقُصۡ مِنۡهُ قَلِیۡلًا اَوۡ زِدۡ عَلَیۡهِ وَ رَتِّلِ الۡقُرۡاٰنَ تَرۡتِیۡلًا) হে চাঁদরাবৃত মাহবুব, আপনি ক্বীয়ামুল লাইল করুন, রাতের কিছু অংশ কিংবা অর্ধরাত্রি অথবা তার থেকে কিছু কম; অথবা বেশি (আপনার যেরূপ ইচ্ছা)আর আপনি কুরআন শরীফকে তিলাওয়াত করুন সুস্পষ্ট উচ্চারণে, ধীরে-ধীরে এবং তারতিলের সাথে (ছুরা আল-মুজ্জাম্মিল – ৭৩:১–২)

৪. یٰۤاَیُّهَا الۡمُدَّثِّرُ - হে বস্ত্রাবৃত মাহবুব

মহান আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ (یٰۤاَیُّهَا الۡمُدَّثِّرُ قُمۡ فَاَنۡذِرۡ وَ رَبَّكَ فَكَبِّرۡ) হে বস্ত্রাবৃত মাহবুব! আপনি (মানুষকে) সতর্ক করার জন্যে উঠে পড়ুনআর আপনার প্রতিপালককে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা করুন (ছুরা আল-মুদ্দাস্সির – ৭৪:১–২)

চিন্তা করুন, মহান আল্লাহ তা’য়ালা এইভাবেই সম্মানসূচক লক্বব দিয়ে সম্বোধন করেছেন উনার হাবীব ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে মহান আল্লাহ তা’য়ালা কুরআন শরীফে চারবার ‘মুহাম্মাদ’ নাম উল্লেখ করেছেন, কিন্তু একবারও ‘يَا مُحَمَّدُ’ বলে সম্বোধন করেননি বরং সবসময় সম্মানসূচক লক্বব ব্যবহার করে রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে সম্বোধন করেছেন, যা উনার সর্বোচ্চ মর্যাদা ও আখলাকের প্রতি ইঙ্গিত করে

এর পিছনে হাক্বিকতঃ ইমাম ইবনু কাসীর রহমতুল্লাহ সহ অন্যান্য তাফসিরকারগণ বলেন, “মহান আল্লাহ তা’য়ালা নবীজিকে কখনো নাম ধরে সম্বোধন করেননি, কারণ ‘নাম ধরে ডাকাতে আদব ও সম্মান কমে যেতে পারে, বরং মহান আল্লাহ তা’য়ালা সম্মান প্রদর্শনের জন্য লক্বব দিয়ে সম্বোধন করেছেন” (তাফসীর ইবনু কাসীর, সূরা তাওবা ৯:১২৮, সূরা আহযাব)

আর এই শয়তান ইমাম নাকি মদিনা ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রী নিয়ে ইমাম হয়ে এসেছে, অথচ সে কীভাবে রহমাতাল্লিল য়া’লামিন উনাকে সম্বোধন করতে হয় শিখেনাইমহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ (لَا تَجۡعَلُوا۟ دُعَآءَ ٱلرَّسُولِ بَيۡنَكُمۡ كَدُعَآءِ بَعۡضِكُم بَعۡضٗا) তোমরা রছূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে ডাকার পদ্ধতিকে একে-অন্যকে ডাকার মতো সাধারণ করে তুলো না(আল কুরআন ২৪/৬৩)


ভিডিওর বক্তব্যে আমরা শোনতে পাচ্ছি যে, আক্রমণকারী উম্মতের দাবী হচ্ছে সে মিলাদ শরীফ বিদআত ও নবীজিকে পিয়ন বলা হয়েছে কি না, হলে কিজন্য তার ব্যাখ্যা জানতে চাইছিলো, কিন্তু মসজিদ কমিটি তাকে সেটার সুযোগ দেয়নি। তাহলে এই ঘটনার জন্যে মূল দায়ী হলো ঐ কাল্প্রিট ইমাম ও মসজিদ কমিটি, ওয়াজ করবে মানুষের উদ্যেশ্যে আর মানুষ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চাইলে দিবেনা? এটা তো হবেনা।

অতএব হামলাকারী ও ইমামের অনুসারীদের দাবী অনুসারে এমনকি তার নিজের বক্তব্য অনুসারে এটা প্রমাণিত সে রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে পিয়ন আর আল্লাহ তা’য়ালা উনাকে মালিক হিসেবে তুলনা করেছে, এরূপ তুলনাই গোস্তাখি যখন কেউ জেনে শোনে করে, এবং তার বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে সে নিজের মুখেই বলছে আমি এটা বলেছি, ফলে সে শাতিম বলে গন্য হয়েছে, আর শাতিম এর একমাত্র শাস্তি শরিয়ত অনুসারে কতল করা খিলাফতের খলিফার অধিনেএখন তো খিলাফত নাই মানুষ কি করবে?

কিতাবঃ আশ-শিফা – ক্বাযী ইয়া’য রহমতুল্লাহ বলেন, “যদি কেউ এমন কিছু বলে যা নবুয়তের সম্মান ও মর্যাদাকে হ্রাস করে, তবে তা স্পষ্ট গোস্তাখি ও কুফরি কথা

কিতাবঃ আস-ছারিমুল মাসলূল – ইবনে তাইমিয়্যাহ বলেছেন, “নবীকে এমনভাবে তুলনা করা যা উনার মহান মর্যাদার বিরুদ্ধে যায় – তাতে তাওবা করলেও তাকে হত্যা করা বৈধ”

এখন একজন উম্মত, আশিকে রছুলের সম্মুখে যদি কেউ গোস্তাখী করে তাহলে সে কি করবে?

আমার মতে আম পাবলিক/অমুছলিম হলে তাকে প্রথমে সুন্দর করে শানে রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বুঝাবে। যদি বুঝানোর পরেও গোস্তাখী করে, শাতিম হয়, তাহলে তাকে শাস্তি দিতে চাইলে দেশি আইনে যে বিচার হবে ঐ শাস্তির বিপরীতে সেটা মেনে নেওয়ার মতো কলিজা নিয়েই শাস্তি দিতে হবে। আম পাবলিকের বেলায় বুঝানোর সাবজেক্ট থাকলেও কোন ছ্বলাফি, দেওবন্দি য়া’লীমের বেলায় বুঝানোর কিছুই নাই, হয় শাস্তি দিবে, ক্ষমতা না থাকলে ছ্ববর।  

আচ্ছাহ, চিন্তা করা যায়? মহান আল্লাহ পাক বললেন হাবিব আমি যেখানে রব্বুল য়া’লামিন (اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ) (আল কুরআন ১/১) আপনি সেখানে রহমাতাল্লিল য়া’লামিন (وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰكَ اِلَّا رَحۡمَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ) (আল কুরআন ২১/১০৭) ছ্বহাবিদের বললেনঃ (یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقُوۡلُوۡا رَاعِنَا وَ قُوۡلُوا انۡظُرۡنَا وَ اسۡمَعُوۡا ؕ وَ لِلۡكٰفِرِیۡنَ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ) হে মু’মিনগণ! তোমরা (নবীজিকে উদ্দেশ্য করে) “রঈনা” (আমাদের দিকে তাকাও) বলো না, বরং বলো, “উনজ্বুরনা” (আমাদের দিকে নজরে করম ফরমান) আর মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করুন। আর কাফেরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি(আল কুরআন ২/১০৪)

এক ছ্বহাবি একদিন মসজিদে নববিতে নামাজ পড়ানোর সময় কিবলার দিকে থুতু ফেলে, রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম দেখে তার পিছনে নামাজ নিষিদ্ধ করে দিলেন(আবু দাউদ শরীফ, হাদিছ নং ৪৮১ আন্তর্জাতিক) মিশকাতুল মাছাবিহ-এর ৭৮৭ নং হাদিছে বলা হয়েছে ঐ ইমাম রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে কষ্ট দিয়েছে

মাকামে মুহাম্মদ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম, যে কিবলার চেয়েও বড় এটা আজকের মদিনা ইউনিভার্সিটির ডিগ্রীপ্রাপ্ত গোস্তাখেরা কি বুঝবে? যে বলদেরা ছাফাই গাইছে তারা রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম উনার যামানায় থাকলে বলতো ঐ ইমাম তো থুতু ফেলানো গোস্তাখী, কষ্টের কারন তা জানতোনা, তার ইমামতি বাতিল করা ঠিক হয়নি রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামের, নাউযুবিল্লাহ। 

আসলে আমাদের মসজিদ মাদ্রাসায় মুফতি মাসুদ, ইমরান বিন বশিরের মতো দেওবন্দি, ছ্বলাফি গোস্তাখেরা সারাজীবন ইমামতি করে একসময় কেন নাস্তিক হয়ে যায় আমরা কি তা বুঝি? কেননা তারা শানে রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বুঝেনা

শান কতটুকু?

সামান্য সাউন্ড নবীর সাউন্ড এর চেয়ে বেড়ে যাওয়ায়, মহান আল্লাহ পাক কুরআনে ধমকি দিচ্ছেন জ্বলিলুল ক্বদর ছ্বহাবি আবু বকর ও উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাদের, যে গোস্তাখে রছুল এমন আমল যা কেউ করলে তার সকল নেক আমল বরবাদ করে দেওয়া হবে। (یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَرۡفَعُوۡۤا اَصۡوَاتَكُمۡ فَوۡقَ صَوۡتِ النَّبِیِّ وَ لَا تَجۡهَرُوۡا لَهٗ بِالۡقَوۡلِ كَجَهۡرِ بَعۡضِكُمۡ لِبَعۡضٍ اَنۡ تَحۡبَطَ اَعۡمَالُكُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَشۡعُرُوۡنَ) (আল কুরআন ৪৯/২)

ঐ মসজিদ কমিটি আর জনতাগুলির ঈমান যে চলে গেছে এরা নিজেও জানেনা। আবূ হুরাইরাহ রদ্বিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিতরছূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বলেনঃ সেই মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কছম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ (ততক্ষণ পর্যন্ত) প্রকৃত মু‘মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকট তার পিতা ও সন্তানাদি এবং সমস্ত মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই(বুখারি শরীফ ১৪, ১৫, ১৬)

পরিশেষেঃ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ (لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا) নিশ্চয়ই রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম উনার মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ সেই ব্যক্তির জন্য, যে মহান আল্লাহ তা’য়ালার সাক্ষাৎ ও আখিরাত দিবসে সফলতা লাভের আশা রাখে এবং অধিক পরিমাণে মহান আল্লাহ তা’য়ালার জিকির করে(সূরাহ আল-আহযাব ৩৩:২১)

জানার বিষয় হলো, আল্লাহ পাক কি পিয়নের মধ্যে, পিয়নের জীবন সমস্ত মানুষের জন্যে আদর্শ বলেছেন? পিয়নের জীবন আদর্শ হয়? পিয়ন আদর্শের মাপকাঠি? মহান আল্লাহ পাক রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম উনার শান মান বোঝাতে চাচ্ছেন খুলে খুলে, আর জানোয়ারগুলি নাস্তিকদের সহযোগিতা করছে ইহানত করাতে

আল্লাহু মুস্তা’য়ান।